ঢাকা , শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
ত্রৈমাসিক চলনবিলের সময় পত্রিকার প্রিন্ট,অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়া  জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

কৃষকের মুখে হাসি নেই, মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলনে

  • অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপলোড সময় : ০৯:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪
  • ১৬৮ বার দেখা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের হাওরবেষ্টিত ইটনা উপজেলায় এবার মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। স্বল্প সার, কীটনাশক প্রয়োগে আশানুরূপ মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন হলেও বাজার সিন্ডিকেটের কারণে কাঙ্ক্ষিত দাম না-পাওয়ায় কুমড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে চাষিরা। হাওরে পাইকার না আসায় জমিতেই নষ্ট হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া। কাঙ্ক্ষিত দাম ও সবজি পচন রোধে হাওরে হিমাগার নির্মাণের দাবি কৃষকদের।

ইটনা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ৭৪০ একর জমিতে সুইট বল, ইউলোকার্ট, ওয়ান্ডার গোল্ড ও বারী মিষ্টি কুমড়া-১ জাতের মিষ্টি কুমড়া আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি বছর ব্যাপক ফলন হলেও, কাঙ্ক্ষিত দাম না-পাওয়ায় হতাশায় ভুগছে কৃষকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পতিত ও অনুর্বর জমিতে কম খরচ ও পরিশ্রমে বেশি লাভের আশায়, মহাজনী সুদের টাকা নিয়ে সবজি চাষ করেন কৃষকরা। উৎপাদিত পণ্য যথাসময়ে বিক্রি ও ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকসানের ঝুঁকিতে রয়েছে কৃষকরা কয়েক শত কৃষক।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বড়িবাড়ি, রায়টুটি, বাদলা ও এলেংজুরী, মৃগা ও ধনপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের সাড়ে ৭০০ প্রান্তিক কৃষক ৪৭০ একর জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছে। গত বছরের হিসেবে এবার চাষ ও উৎপাদন বেড়েছে। একর প্রতি ১৮-২০ মেট্রিক টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ধনুনদীর তীরে বড়িবাড়ি ফেরিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জমিতে আবাদে পরে আছে পরিপক্ব মিষ্টি কুমড়া। অনেক পচা কুমড়া তুলে নিয়ে নদীতে ফেলছেন কৃষকরা। কৃষকরা জানান, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে হাওরাঞ্চলের সবজি কিনতে গড়িমসি ও কম দাম দিচ্ছে। এতে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক পরিবারগুলো। এই ব্যাপারে কৃষি বিপণন বিভাগের সহায়তা চান তারা।


কৃষক আবদুল কাদির বলেন, বেশি লাভের জন্য ধার-কর্জ করে এবার সাড়ে চার একর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করছি। ভালো ফলন হইছে, কিন্তু বেচা-বিক্রি করতে পারি না। ৬ লাখ বিক্রির আশা করছি, বিক্রি হইছে ৩ লাখ টাকা। এখন পাইকার আসেনা, পচন ধরেছে কুমড়ায়।

কৃষক রাজ্জাক মিয়া বলেন, কুমড়া ৭-৮ টাকা কেজি দামে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু হাওরের বিভিন্ন হাট-বাজারে চার-পাঁচ গুণ বেশি দরে বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা। সবজি চাষে কৃষক থেকে ফড়িয়াদের লাভ বেশি। হাওরে হিমাগার থাকলে সুবিধামত সময়ে ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পারতাম সবজি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ উজ্জ্বল সাহা বলেন, আমিও বিভিন্ন সূত্রে শুনেছি মিষ্টি কুমড়া চাষিরা তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারছে না। আমরা সারা বছর কৃষকদের উৎসাহিত করে উৎপাদন বাড়ায়। উপযুক্ত দাম না পান এতে উৎসাহ হারাবে কৃষক। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের সঠিক দামের বিষয়ে সরকারি সহযোগিতা কামনা করি।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ধারের নামে ঋণের ফাঁদ পা দিলেই মাথায় হাত কেরানীগঞ্জের গ্রামে গ্রামে ঋণজাল

কৃষকের মুখে হাসি নেই, মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলনে

আপলোড সময় : ০৯:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪

কিশোরগঞ্জের হাওরবেষ্টিত ইটনা উপজেলায় এবার মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। স্বল্প সার, কীটনাশক প্রয়োগে আশানুরূপ মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন হলেও বাজার সিন্ডিকেটের কারণে কাঙ্ক্ষিত দাম না-পাওয়ায় কুমড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে চাষিরা। হাওরে পাইকার না আসায় জমিতেই নষ্ট হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া। কাঙ্ক্ষিত দাম ও সবজি পচন রোধে হাওরে হিমাগার নির্মাণের দাবি কৃষকদের।

ইটনা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ৭৪০ একর জমিতে সুইট বল, ইউলোকার্ট, ওয়ান্ডার গোল্ড ও বারী মিষ্টি কুমড়া-১ জাতের মিষ্টি কুমড়া আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি বছর ব্যাপক ফলন হলেও, কাঙ্ক্ষিত দাম না-পাওয়ায় হতাশায় ভুগছে কৃষকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পতিত ও অনুর্বর জমিতে কম খরচ ও পরিশ্রমে বেশি লাভের আশায়, মহাজনী সুদের টাকা নিয়ে সবজি চাষ করেন কৃষকরা। উৎপাদিত পণ্য যথাসময়ে বিক্রি ও ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকসানের ঝুঁকিতে রয়েছে কৃষকরা কয়েক শত কৃষক।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বড়িবাড়ি, রায়টুটি, বাদলা ও এলেংজুরী, মৃগা ও ধনপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের সাড়ে ৭০০ প্রান্তিক কৃষক ৪৭০ একর জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছে। গত বছরের হিসেবে এবার চাষ ও উৎপাদন বেড়েছে। একর প্রতি ১৮-২০ মেট্রিক টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ধনুনদীর তীরে বড়িবাড়ি ফেরিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জমিতে আবাদে পরে আছে পরিপক্ব মিষ্টি কুমড়া। অনেক পচা কুমড়া তুলে নিয়ে নদীতে ফেলছেন কৃষকরা। কৃষকরা জানান, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে হাওরাঞ্চলের সবজি কিনতে গড়িমসি ও কম দাম দিচ্ছে। এতে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক পরিবারগুলো। এই ব্যাপারে কৃষি বিপণন বিভাগের সহায়তা চান তারা।


কৃষক আবদুল কাদির বলেন, বেশি লাভের জন্য ধার-কর্জ করে এবার সাড়ে চার একর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করছি। ভালো ফলন হইছে, কিন্তু বেচা-বিক্রি করতে পারি না। ৬ লাখ বিক্রির আশা করছি, বিক্রি হইছে ৩ লাখ টাকা। এখন পাইকার আসেনা, পচন ধরেছে কুমড়ায়।

কৃষক রাজ্জাক মিয়া বলেন, কুমড়া ৭-৮ টাকা কেজি দামে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু হাওরের বিভিন্ন হাট-বাজারে চার-পাঁচ গুণ বেশি দরে বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা। সবজি চাষে কৃষক থেকে ফড়িয়াদের লাভ বেশি। হাওরে হিমাগার থাকলে সুবিধামত সময়ে ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পারতাম সবজি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ উজ্জ্বল সাহা বলেন, আমিও বিভিন্ন সূত্রে শুনেছি মিষ্টি কুমড়া চাষিরা তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারছে না। আমরা সারা বছর কৃষকদের উৎসাহিত করে উৎপাদন বাড়ায়। উপযুক্ত দাম না পান এতে উৎসাহ হারাবে কৃষক। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের সঠিক দামের বিষয়ে সরকারি সহযোগিতা কামনা করি।