একমাত্র ছেলের মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্ত্রী নাঈমা সুলতানাসহ কানাডায় ছুটে গেছেন সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় তিনি কানাডার টরন্টোতে পৌঁছেছেন বলে জানায় শিল্পীর পরিবার। বিমানবন্দরের প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেই নিবিড় কুমারকে দেখতে কুমার বিশ্বজিৎ ও তাঁর স্ত্রী নাঈমা সুলতানা ছুটে যান হাসপাতালে। সেখান থেকে সন্তানের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার খবর নেন কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কাছ থেকে।
বাংলাদেশ সময় আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টায় কানাডার টরেন্টো থেকে প্রথম আলোকে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, নিবিড়ের চিকিৎসার এখনো দুইটা স্টেজ আছে। সৃষ্টিকর্তার অপার কৃপায় যদি সেই দুটি স্টেজ সুন্দরভাবে পার করে আসতে পারি, তখন বলব, শতভাগ সফল।
দুইটা পর্যায় কী কী, জানতে চাইলে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘দুইটা স্টেজের মধ্যে আছে স্বাভাবিকভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার এবং জ্ঞান ফিরে পাওয়ার বিষয়টি। ওর শরীরে ব্যথা আছে। এর মধ্যে আজ রাতে (কানাডা সময় বুধবার দিবাগত রাত) পাকস্থলীর একটা অস্ত্রোপচার হয়েছে।
কুমার বিশ্বজিৎ জানান, দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর নিবিড়ের শরীরে দুটো অস্ত্রোপচার হয়েছে। প্রথমটা মস্তিষ্কে, মস্তিষ্কে যে রক্ত জমাট ছিল, তা বের করা হয়েছে। আর দ্বিতীয়টা পাকস্থলীতে। আরও কয়েকটা স্টেজ রয়ে গেছে। সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
কুমার বিশ্বজিৎ কথায় কথায় আরও জানান, ‘নিবিড়ের আরও একটা অস্ত্রোপচার হতে পারে। চিকিৎসকেরা ভাবছেন, ওর একটা স্ট্রোকও হয়তো হয়েছে। স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস নিলে এবং জ্ঞান ফিরলে সবার শেষে এই অস্ত্রোপচার করা হবে।’
কুমার বিশ্বজিৎ বললেন, নিবিড়ের অবস্থা এখন অপরিবর্তিত। কোনো অবনতি নেই। কানাডার ডাউন টাউনের সেন্ট মাইকেল হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। আর নিবিড়ের সার্জারির দায়িত্ব যিনি আছেন, তিনি নিউরোর বেস্ট সার্জন।
কুমার বিশ্বজিতের একমাত্র ছেলে নিবিড় কুমার। পড়াশোনার জন্য থাকেন কানাডায়। সেখানেই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় হয়েছেন গুরুতর আহত। মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনায় নিবিড় কুমার আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও একই দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় নিবিড় চালকের আসনে ছিলেন। অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশ (ওপিপি) জানায়, টরন্টোর হাইওয়ে ৪২৭-এর দুনদাস স্ট্রিট ওয়েস্টে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ সময় গাড়িটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল। সড়ক বিভাজকে ধাক্কা খেয়ে গাড়িটি উল্টে আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে চারজন আরোহী ছিলেন।