ঢাকা , শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
ত্রৈমাসিক চলনবিলের সময় পত্রিকার প্রিন্ট,অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়া  জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

আফগানিস্তানে ৯০ শতাংশ পরিবার ঋণে জর্জরিত

আফগানিস্তানে প্রতি ১০ পরিবারের ৯টিই বর্তমানে খাদ্য সংকট বা ঋণের বোঝায় জর্জরিত। গতকাল বুধবার প্রকাশিত জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপির এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বিশেষ করে দারিদ্র্যপীড়িত পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলে ফেরত আসা লাখো উদ্বাস্তুর চাপ দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। খবর আলজাজিরার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৫ লাখ আফগান নিজ দেশে ফিরে এসেছেন।

তালেবান শাসিত আফগানিস্তান এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়া, নিষেধাজ্ঞা এবং বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত। এর মধ্যে ১৫ লাখকে এ বছর জোরপূর্বক ফিরিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান ও ইরান। ফিরে আসা আফগানরা মারাত্মক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। ফেরত আসা পরিবারের অর্ধেকের বেশি খাবার জোগাতে চিকিৎসাসেবা বাদ দিচ্ছে এবং ৯০ শতাংশেরও বেশি পরিবার ঋণের ফাঁদে পড়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এসব পরিবারের গড় ঋণের পরিমাণ ৩৭৩ থেকে ৯০০ ডলার পর্যন্ত, অথচ গড় মাসিক আয় মাত্র ১০০ ডলার। ৪৮ হাজারের বেশি পরিবারের ওপর করা এক জরিপের ভিত্তিতে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

ফেরত আসা লোকজন বাসস্থানের সমস্যাতেও ভুগছেন। ভাড়া তিন গুণ বেড়ে গেছে। অর্ধেকের বেশি মানুষ জানিয়েছে যে, তাদের পর্যাপ্ত স্থান বা বিছানাপত্র নেই। গত এক বছরে ১৮ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয়বারের মতো বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলের ইনজিল ও গুজারা জেলায় ফেরত আসা বেশিরভাগ শরণার্থী তাঁবুতে বা জরাজীর্ণ স্থাপনায় বসবাস করছেন।

ইউএনডিপি বলেছে, দ্রুত সহায়তা না পেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আফগানিস্তানে সংস্থাটির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন রদ্রিগেস বলেন, আঞ্চলিকভাবে আয়, বাসস্থান ও সামাজিক সংহতি জোরদার করলে ফেরত আসা শরণার্থী এলাকাগুলোর চাপ কমানো সম্ভব।

দীর্ঘ যুদ্ধ, ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার এবং পরবর্তী মানবিক সংকটের পর আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক সহায়তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। জাতিসংঘ এ বছর আফগানিস্তানের জন্য ৩.১ বিলিয়ন ডলারের তহবিল চেয়েছিল, যা দাতা দেশগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

 

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আফগানিস্তানে ৯০ শতাংশ পরিবার ঋণে জর্জরিত

আপলোড সময় : ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে প্রতি ১০ পরিবারের ৯টিই বর্তমানে খাদ্য সংকট বা ঋণের বোঝায় জর্জরিত। গতকাল বুধবার প্রকাশিত জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপির এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বিশেষ করে দারিদ্র্যপীড়িত পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলে ফেরত আসা লাখো উদ্বাস্তুর চাপ দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। খবর আলজাজিরার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৫ লাখ আফগান নিজ দেশে ফিরে এসেছেন।

তালেবান শাসিত আফগানিস্তান এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়া, নিষেধাজ্ঞা এবং বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত। এর মধ্যে ১৫ লাখকে এ বছর জোরপূর্বক ফিরিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান ও ইরান। ফিরে আসা আফগানরা মারাত্মক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। ফেরত আসা পরিবারের অর্ধেকের বেশি খাবার জোগাতে চিকিৎসাসেবা বাদ দিচ্ছে এবং ৯০ শতাংশেরও বেশি পরিবার ঋণের ফাঁদে পড়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এসব পরিবারের গড় ঋণের পরিমাণ ৩৭৩ থেকে ৯০০ ডলার পর্যন্ত, অথচ গড় মাসিক আয় মাত্র ১০০ ডলার। ৪৮ হাজারের বেশি পরিবারের ওপর করা এক জরিপের ভিত্তিতে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

ফেরত আসা লোকজন বাসস্থানের সমস্যাতেও ভুগছেন। ভাড়া তিন গুণ বেড়ে গেছে। অর্ধেকের বেশি মানুষ জানিয়েছে যে, তাদের পর্যাপ্ত স্থান বা বিছানাপত্র নেই। গত এক বছরে ১৮ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয়বারের মতো বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলের ইনজিল ও গুজারা জেলায় ফেরত আসা বেশিরভাগ শরণার্থী তাঁবুতে বা জরাজীর্ণ স্থাপনায় বসবাস করছেন।

ইউএনডিপি বলেছে, দ্রুত সহায়তা না পেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আফগানিস্তানে সংস্থাটির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন রদ্রিগেস বলেন, আঞ্চলিকভাবে আয়, বাসস্থান ও সামাজিক সংহতি জোরদার করলে ফেরত আসা শরণার্থী এলাকাগুলোর চাপ কমানো সম্ভব।

দীর্ঘ যুদ্ধ, ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার এবং পরবর্তী মানবিক সংকটের পর আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক সহায়তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। জাতিসংঘ এ বছর আফগানিস্তানের জন্য ৩.১ বিলিয়ন ডলারের তহবিল চেয়েছিল, যা দাতা দেশগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।