পঞ্চগড়ে বছরের পর বছর ধরে চলছে অনুমোদনহীন অবৈধ ইটভাটায় ইট পোড়ানো। আইন না মেনে কৃষিজমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে এবং আবাসিক এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে ইটভাটা। এতে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে জনজীবন, খেতের ফসল ও শিক্ষার্থীদের পাঠদানে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দিব্যি চলছে কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর কার্যক্রম।
চলতি মৌসুমে পঞ্চগড়ে এবারও চলছে ভাটায় ইট পোড়ানোর কার্যক্রম। তবে সিংহভাগ ইটভাটা অনুমোদনহীন। কিন্তু কোনো বাধা ছাড়াই চলছে এসব ইটভাটা।
জ্বালানি হিসেবে কয়লা ব্যবহার করার কথা থাকলেও, আইন না মেনে পোড়ানো হচ্ছে কাঠখড়ি। ভাটার বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়ায় কৃষকের ধানসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
এলাকাবাসী বলছেন, ইটভাটার ধুলাবালির কারণে প্রায় সময় বাচ্চাদের সর্দি-কাশি লেগেই থাকে।
স্থানীয় এক কৃষক জানান, যখন ধান বের হওয়ার সময় হয়, তখন দেখা যায় যে ইটভাটার গ্যাসে ধানগুলো নষ্ট হয়ে যায়। স্থানীয়
স্কুল শিক্ষকের দাবি, ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় কারও সর্দি হচ্ছে, কাশি হচ্ছে। ইটের ভাটার যে কালো ধোঁয়া, ওই ধোঁয়ায় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়, তখন তারা আর স্কুলে আসতে পারে না। অনেক শিশুরা ওই ভাটায় চলে যাচ্ছে, তারা ওইখানে কাজ করছে।
কালো ধোয়া ও ক্ষতিকর বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হওয়ার কারণে ভাটা সংলগ্ন গ্রামগুলোতে ফল ও ফলের গাছসহ সব গাছ, এমনকি পুকুরের মাছ চাষও ব্যাহত হচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) পঞ্চগড় ইউনিটের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম খায়ের জানান, পাথর উত্তোলনের কারণে এ জেলা এমনিতেই ঘূর্ণিঝড়প্রবণ। আর পাশাপাশি অনেক ইটভাটা কিভাবে ছাড়পত্র পেয়েছে, সেটাও কিন্তু প্রশ্নবিদ্ধ।
জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে অবৈধ ইট ভাটাগুলো বন্ধ করা হবে, এমন আশ্বাস কর্তৃপক্ষের।
পঞ্চগড় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. ইউসুফ আলী জানান, জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ইটভাটার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। দুটি ইটভাটার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দেবীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম ফেরদৌস জানান, ইতিমধ্যে একটি ইটভাটাকে জরিমানা করা হয়েছে। বাকিদের নোটিশ দিয়ে সর্তক করা হয়েছে।