পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে জেতার পরও আসন ছেড়ে দিয়েছেন জামায়াত-ই-ইসলামি (জেআই) নেতা হাফিজ নাঈম-উর-রহমান। সেইসঙ্গে বলেছেন, ‘কারচুপি করে আমাকে জেতানো হয়েছে; জিতেছেন আসলে ইমরানের প্রার্থীই। এ জয় আমি চাই না।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়ে সিন্ধের প্রাদেশিক পরিষদের পিএস-১২৯ আসনটি ছেড়ে দেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবারের (৮ ফেব্রুয়ারি) সাধারণ নির্বাচনে করাচি সেন্ট্রাল থেকে সিন্ধ অ্যাসেম্বলির পিএস-১২৯ আসন থেকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় হাফিজ নাঈম-উর-রহমানকে। তবে ফলাফল ঘোষণার পর সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত-ই-ইসলামির এ নেতা দাবি করেন, আসনটিতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীই জিতেছেন। তিনি কোনও ‘দাতব্য’ আসন চান না। এ আসনে যার অধিকার আছে তাকেই দেওয়া উচিত।
এমপিএ হিসেবে শপথ নেবেন না জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ বলেন, তিনি নিজের আসনটি ফিরিয়ে দিচ্ছেন। তবে কারচুপির কারণে তার দলের হারানো সব আসন পুনরুদ্ধার করতে আইনি ও রাজনৈতিক লড়াই চালিয়ে যাবেন।
তিনি আরও বলেন, মিথ্যা ম্যান্ডেট (জনসমর্থন) দিয়ে জনগণের মন পরিবর্তন করা যাবে না। পিটিআই সমর্থিত প্রার্থী বেশি ভোট পেয়েছেন। তাই পিটিআইয়ের জয় ও ম্যান্ডেট মেনে নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। নজিরবিহীন বিলম্বের পর রোববার ২৬৪টি আসনে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০১ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় পরিষদে সরকার গঠনের জন্য ১৩৪টি আসন প্রয়োজন। নির্বাচনে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ৯৩ জনই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই-সমর্থিত। ৭৫ আসনে জিতে এরপরের অবস্থানে আছে নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন)। আর ৫৪ আসনে জয়লাভ করে তৃতীয় অবস্থানে বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। এছাড়া এমকিউএম ১৭টি ও অন্যান্য দল ১৭টি আসনে জয়লাভ করেছে।
ফলে, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে সরকার গঠনের জন্য নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি কোনও দলই। তাই জোট গঠনে তোড়জোর চালাচ্ছে দলগুলো। বিশেষ করে নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপির জোটবদ্ধ হওয়ার বিষয়টি এখন অনেকটাই পাকা। তবে, বড় এ দুই দলের মোট আসনও পূরণ করতে পারছে না সরকার গঠনের জন্য ন্যূনতম আসন পূরণের শর্ত। এজন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী, বিশেষ করে কারাগারে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শিবিরে হানা দিচ্ছেন নওয়াজ।