ঢাকা , বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
ত্রৈমাসিক চলনবিলের সময় পত্রিকার প্রিন্ট,অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়া  জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

অগ্নি ঝরা মার্চ: স্বাধীনতার সোপান

  • হান্ডিয়াল নিউজ
  • আপলোড সময় : ১০:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫
  • ১৪৩ বার দেখা হয়েছে।

মার্চ মাস বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবময় ও বেদনাময় অধ্যায়। ১৯৭১ সালের এই মাসেই রচিত হয়েছিল বাঙালির মুক্তির সনদ, অঙ্কিত হয়েছিল স্বাধীনতার রূপরেখা। এই মাসেই পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি ফুঁসে উঠেছিল, যার চূড়ান্ত পরিণতি হয় ২৫ মার্চের গণহত্যা ও ২৬ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণা। তাই মার্চ মাস শুধু একটি ক্যালেন্ডারের পাতা নয়, এটি আমাদের মুক্তির সূচনা ও আত্মত্যাগের প্রতীক।

উত্তাল দিনগুলোর প্রতিধ্বনি

১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালিদের ক্ষমতা হস্তান্তর করতে টালবাহানা শুরু করে। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালির স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা দেয়। “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”—এই আহ্বানে উদ্বুদ্ধ হয়ে সর্বস্তরের মানুষ প্রস্তুত হতে থাকে চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য।

সংগ্রাম থেকে স্বাধীনতার পথে

৭ মার্চের পর দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়, যা কার্যত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একপ্রকার বিদ্রোহে পরিণত হয়। সারাদেশে প্রশাসন, বাণিজ্য ও শিল্প-কারখানা অচল হয়ে পড়ে। পাকিস্তানি শাসকরা একদিকে আলোচনার নামে কালক্ষেপণ করছিল, অন্যদিকে সামরিক প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

অবশেষে ২৫ মার্চ রাতে শুরু হয় ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা—অপারেশন সার্চলাইট। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়। সেই রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন, যা ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হিসেবে প্রচারিত হয়।

শিক্ষাগ্রহণ ও অঙ্গীকার

অগ্নিঝরা মার্চ শুধু ইতিহাসের পাতা নয়, এটি আমাদের জন্য শিক্ষা ও অনুপ্রেরণার উৎস। এই মাস আমাদের শেখায়, অধিকার আদায়ের জন্য ঐক্য, সাহস ও ত্যাগের বিকল্প নেই। আজ স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, গণতন্ত্র ও সাম্যের বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

মার্চ মাসের চেতনা হোক আমাদের পথচলার দিশারি, যেন এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব কোনোভাবেই বিপন্ন না হয়। অগ্নিঝরা মার্চের বীর শহীদদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।

 

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ধারের নামে ঋণের ফাঁদ পা দিলেই মাথায় হাত কেরানীগঞ্জের গ্রামে গ্রামে ঋণজাল

অগ্নি ঝরা মার্চ: স্বাধীনতার সোপান

আপলোড সময় : ১০:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫

মার্চ মাস বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবময় ও বেদনাময় অধ্যায়। ১৯৭১ সালের এই মাসেই রচিত হয়েছিল বাঙালির মুক্তির সনদ, অঙ্কিত হয়েছিল স্বাধীনতার রূপরেখা। এই মাসেই পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি ফুঁসে উঠেছিল, যার চূড়ান্ত পরিণতি হয় ২৫ মার্চের গণহত্যা ও ২৬ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণা। তাই মার্চ মাস শুধু একটি ক্যালেন্ডারের পাতা নয়, এটি আমাদের মুক্তির সূচনা ও আত্মত্যাগের প্রতীক।

উত্তাল দিনগুলোর প্রতিধ্বনি

১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালিদের ক্ষমতা হস্তান্তর করতে টালবাহানা শুরু করে। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালির স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা দেয়। “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”—এই আহ্বানে উদ্বুদ্ধ হয়ে সর্বস্তরের মানুষ প্রস্তুত হতে থাকে চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য।

সংগ্রাম থেকে স্বাধীনতার পথে

৭ মার্চের পর দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়, যা কার্যত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একপ্রকার বিদ্রোহে পরিণত হয়। সারাদেশে প্রশাসন, বাণিজ্য ও শিল্প-কারখানা অচল হয়ে পড়ে। পাকিস্তানি শাসকরা একদিকে আলোচনার নামে কালক্ষেপণ করছিল, অন্যদিকে সামরিক প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

অবশেষে ২৫ মার্চ রাতে শুরু হয় ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা—অপারেশন সার্চলাইট। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়। সেই রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন, যা ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হিসেবে প্রচারিত হয়।

শিক্ষাগ্রহণ ও অঙ্গীকার

অগ্নিঝরা মার্চ শুধু ইতিহাসের পাতা নয়, এটি আমাদের জন্য শিক্ষা ও অনুপ্রেরণার উৎস। এই মাস আমাদের শেখায়, অধিকার আদায়ের জন্য ঐক্য, সাহস ও ত্যাগের বিকল্প নেই। আজ স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, গণতন্ত্র ও সাম্যের বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

মার্চ মাসের চেতনা হোক আমাদের পথচলার দিশারি, যেন এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব কোনোভাবেই বিপন্ন না হয়। অগ্নিঝরা মার্চের বীর শহীদদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।