ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। সবাইকে হান্ডিয়াল নিউজ২৪ পরিবারের পক্ষ থেকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা।

হারিয়ে যাওয়ার ১৯ বছর পরে যমজ বোনদের এক করল টিকটক

ছবি : সংগৃহীত

জন্ম একসঙ্গে হলেও ভাগ্যের নির্মমতার কারণে দীর্ঘদিন আলাদা থাকতে হয়েছে তাদের। সিনেমার কাহিনির সঙ্গে মিলে যাবে পূর্ব ইউরোপের দেশ জর্জিয়ার দুই বোনের গল্প। দুজন দেখতে হুবহু একই রকম। চোখ, কান, নাক, মুখের আদলে দুজনের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে বের করা দুষ্কর। কারণ সম্পর্কে তারা যমজ বোন। অথচ ১৯ বছর ধরে একই শহরে থাকা সত্ত্বেও তারা কেউ কাউকে চিনতেন-ই না! অবশেষে ভাইরাল হওয়া এক টিকটক ভিডিওতে তারা একজন আরেকজনকে খুঁজে পেয়েছেন।

অ্যামি-অ্যানোর জন্মদাত্রী মা আজা শোনি ২০০২ সালে জন্মগ্রহণজনিত জটিলতায় চলে যান কোমায়। সেই সময় এক ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তার স্বামী গোচা গাখারিয়া। অ্যামি ও অ্যানোকে দুটি আলাদা পরিবারে বিক্রি করে দেন তিনি। খবর বিবিসির।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক দশক ধরেই দেশটির হাসপাতাল থেকে দ্বেগজনকসংখ্যক শিশু চুরি হওয়ার পর বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এর অনেক ঘটনাই এখনো অমীমাংসিতই রয়ে গেছে। অ্যামি আর অ্যানোর নিজেদের খুঁজে পাওয়ার যাত্রা শুরু হয়েছে তাদের ১২ বছর বয়সে। অ্যামি তার প্রিয় টিভি শো ‘জর্জিয়াস গট ট্যালেন্ট’ দেখছিলেন মন দিয়ে। একটি মেয়ে নাচতে গিয়ে হোঁচট খেল। অ্যামি দেখল সেই মেয়েটির সঙ্গে তার চেহারার অদ্ভুত সাদৃশ্য। অ্যামি তখন জানত না যে, নাচতে থাকা মেয়েটিই তার বোন।

তিবিলিসিতে বড় হয়েছেন অ্যানো। আর অ্যামি জুগদিদিতে। দুজনের কেউই একে অপরের অস্তিত্ব সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। ১১ বছর বয়সে একই নাচের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন তারা। দর্শকের চোখেও পড়েছিল তাদের অবিশ্বাস্য সাদৃশ্য। তবু সত্য অধরাই থেকে যায়।

টিকটক ভিডিওটির পর তাদের দেখা হওয়া পর্যন্ত দুই বোনের জীবন চলতে থাকে সমান্তরাল পথে। ২০২১ সালে এক বন্ধুর পাঠানো টিকটক ভিডিওতে অ্যানো দেখতে পান নীল চুলের এক মেয়েকে, যে দেখতে অবিকল তার মতোই। অ্যানো নিজের চুল নীল করে ফেলেছে কেন?— বন্ধুর প্রশ্নের জবাবে অ্যানো বলেন, মেয়েটি তিনি নন।

কিন্তু মেয়েটির পরিচয় জানা তখন জরুরি হয়ে পড়েছে অ্যানোর জন্য। ভিডিওটি সামাজিক প্ল্যাটফরম ফেসবুকে পোস্ট করেন তিনি। তাতেই কাজ হয়। ভিডিওর সেই মেয়ে অ্যামির ফোন নম্বর পেয়ে যান অ্যানো। এর পর তাদের যোগাযোগ হয়। তারা প্রথমবারের মতো জানতে পারেন সেই সত্য যে, তারা দুজন যমজ বোন। জর্জিয়ার হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া হাজার হাজার শিশুর মধ্যে তারাও ছিলেন।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুসার, ২০২১ সালে জর্জিয়ার রাজধানী তিবিলিসির রুস্তাভেলি সেতুতে দেখা হয় দুই বোনের। ১৯ বছর আগে তাদের বিচ্ছেদের পর প্রথমবারের মতো একত্র হন অ্যামি ও অ্যানো।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

হারিয়ে যাওয়ার ১৯ বছর পরে যমজ বোনদের এক করল টিকটক

আপলোড সময় : ০৮:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৪

জন্ম একসঙ্গে হলেও ভাগ্যের নির্মমতার কারণে দীর্ঘদিন আলাদা থাকতে হয়েছে তাদের। সিনেমার কাহিনির সঙ্গে মিলে যাবে পূর্ব ইউরোপের দেশ জর্জিয়ার দুই বোনের গল্প। দুজন দেখতে হুবহু একই রকম। চোখ, কান, নাক, মুখের আদলে দুজনের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে বের করা দুষ্কর। কারণ সম্পর্কে তারা যমজ বোন। অথচ ১৯ বছর ধরে একই শহরে থাকা সত্ত্বেও তারা কেউ কাউকে চিনতেন-ই না! অবশেষে ভাইরাল হওয়া এক টিকটক ভিডিওতে তারা একজন আরেকজনকে খুঁজে পেয়েছেন।

অ্যামি-অ্যানোর জন্মদাত্রী মা আজা শোনি ২০০২ সালে জন্মগ্রহণজনিত জটিলতায় চলে যান কোমায়। সেই সময় এক ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তার স্বামী গোচা গাখারিয়া। অ্যামি ও অ্যানোকে দুটি আলাদা পরিবারে বিক্রি করে দেন তিনি। খবর বিবিসির।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক দশক ধরেই দেশটির হাসপাতাল থেকে দ্বেগজনকসংখ্যক শিশু চুরি হওয়ার পর বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এর অনেক ঘটনাই এখনো অমীমাংসিতই রয়ে গেছে। অ্যামি আর অ্যানোর নিজেদের খুঁজে পাওয়ার যাত্রা শুরু হয়েছে তাদের ১২ বছর বয়সে। অ্যামি তার প্রিয় টিভি শো ‘জর্জিয়াস গট ট্যালেন্ট’ দেখছিলেন মন দিয়ে। একটি মেয়ে নাচতে গিয়ে হোঁচট খেল। অ্যামি দেখল সেই মেয়েটির সঙ্গে তার চেহারার অদ্ভুত সাদৃশ্য। অ্যামি তখন জানত না যে, নাচতে থাকা মেয়েটিই তার বোন।

তিবিলিসিতে বড় হয়েছেন অ্যানো। আর অ্যামি জুগদিদিতে। দুজনের কেউই একে অপরের অস্তিত্ব সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। ১১ বছর বয়সে একই নাচের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন তারা। দর্শকের চোখেও পড়েছিল তাদের অবিশ্বাস্য সাদৃশ্য। তবু সত্য অধরাই থেকে যায়।

টিকটক ভিডিওটির পর তাদের দেখা হওয়া পর্যন্ত দুই বোনের জীবন চলতে থাকে সমান্তরাল পথে। ২০২১ সালে এক বন্ধুর পাঠানো টিকটক ভিডিওতে অ্যানো দেখতে পান নীল চুলের এক মেয়েকে, যে দেখতে অবিকল তার মতোই। অ্যানো নিজের চুল নীল করে ফেলেছে কেন?— বন্ধুর প্রশ্নের জবাবে অ্যানো বলেন, মেয়েটি তিনি নন।

কিন্তু মেয়েটির পরিচয় জানা তখন জরুরি হয়ে পড়েছে অ্যানোর জন্য। ভিডিওটি সামাজিক প্ল্যাটফরম ফেসবুকে পোস্ট করেন তিনি। তাতেই কাজ হয়। ভিডিওর সেই মেয়ে অ্যামির ফোন নম্বর পেয়ে যান অ্যানো। এর পর তাদের যোগাযোগ হয়। তারা প্রথমবারের মতো জানতে পারেন সেই সত্য যে, তারা দুজন যমজ বোন। জর্জিয়ার হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া হাজার হাজার শিশুর মধ্যে তারাও ছিলেন।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুসার, ২০২১ সালে জর্জিয়ার রাজধানী তিবিলিসির রুস্তাভেলি সেতুতে দেখা হয় দুই বোনের। ১৯ বছর আগে তাদের বিচ্ছেদের পর প্রথমবারের মতো একত্র হন অ্যামি ও অ্যানো।