ঢাকা , মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দিদের জন্য বিশেষ খাবারের আয়োজন

সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে রোজাদারদের মাঝে বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার (২৪ মার্চ) বন্দিদের জন্য নিয়মিত ইফতারির পাশাপাশি এদিন কর্তৃপক্ষের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় তরমুজ বিতরণের আয়োজন করা হয়। বন্দিদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এ আয়োজন করা হয়, যা কারাগারের ইতিহাসে এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ হিসেবে দেখা গেছে।

প্রতিদিনের মতো বন্দিদের জন্য ইফতারির তালিকায় ছোলা, মুড়ি, খেজুর, পেঁয়াজু, জিলাপি ও কলা অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে এ দিন তরমুজ সংযোজন বন্দিদের জন্য বাড়তি আনন্দের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারাগার কর্তৃপক্ষের এ উদ্যোগ বন্দিদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করে।

তরমুজ বিতরণের এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন সিরাজগঞ্জের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম। তিনি নিজ হাতে বন্দিদের মাঝে তরমুজ বিতরণ করেন এবং এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগের জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, বন্দিদের জন্য এ ধরনের উদ্যোগ তাদের প্রতি আমাদের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও দায়িত্ববোধকে প্রকাশ করে। এটি শুধু তাদের মনোবল বাড়ানোর জন্যই নয়, বরং সমাজে ইতিবাচক বার্তা প্রদান করে।

এ ছাড়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজগঞ্জ কারাগারের সার্বিক ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন ও খাদ্য সরবরাহ, স্বাস্থ্যসেবা এবং বন্দিদের বসবাসের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি জেল সুপারসহ অন্য কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, বন্দিদের পুনর্বাসন ও সুস্থ জীবনের জন্য উন্নত সেবা প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখা উচিত।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কারাগারের অন্য কর্মচারীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে আরও উন্নত সেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।

এদিকে তরমুজ বিতরণে বন্দিদের মধ্যে আনন্দের সঞ্চার হয়। গত ২৩ মার্চ কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আমি যতদিন কারাগারে বন্দি ছিলাম, ততদিন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হইনি। কারাগারে পরিবেশিত খাবার ভালো ছিল, বিশেষ করে রমজানে সেহরি ও ইফতার খুবই ভালো ছিল।

একই দিনে বন্দি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কারাগারের পরিবেশ অনুকূল ছিল। আমাদের পরিবারের কেউ যখন সাক্ষাৎ করতে আসত, তখন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো না। কারা কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এক্ষেত্রে খুবই সহায়ক ছিলেন।

এ ছাড়া কারাগারের এক বন্দি বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন নিয়মিত ইফতারি পাই, যা আমাদের শারীরিক প্রয়োজন মেটায়। তবে তরমুজের আয়োজন আমাদের মনে এক নতুন অনুভূতি সৃষ্টি করেছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার এএসএম কামরুল হুদা বলেন, ‘বন্দিদের পুনর্বাসন ও সুশৃঙ্খল জীবন নিশ্চিত করার জন্য আমরা সংকল্পবদ্ধ। কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক এবং রাজশাহী বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শকের সার্বিক দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

জেল সুপার বলেন, বন্দিদের সুষ্ঠু জীবনযাপন নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতে আরও নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। কারাগারের উন্নয়ন ও মানবিক উদ্যোগ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দিদের জন্য বিশেষ খাবারের আয়োজন

আপলোড সময় : ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে রোজাদারদের মাঝে বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার (২৪ মার্চ) বন্দিদের জন্য নিয়মিত ইফতারির পাশাপাশি এদিন কর্তৃপক্ষের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় তরমুজ বিতরণের আয়োজন করা হয়। বন্দিদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এ আয়োজন করা হয়, যা কারাগারের ইতিহাসে এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ হিসেবে দেখা গেছে।

প্রতিদিনের মতো বন্দিদের জন্য ইফতারির তালিকায় ছোলা, মুড়ি, খেজুর, পেঁয়াজু, জিলাপি ও কলা অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে এ দিন তরমুজ সংযোজন বন্দিদের জন্য বাড়তি আনন্দের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারাগার কর্তৃপক্ষের এ উদ্যোগ বন্দিদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করে।

তরমুজ বিতরণের এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন সিরাজগঞ্জের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম। তিনি নিজ হাতে বন্দিদের মাঝে তরমুজ বিতরণ করেন এবং এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগের জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, বন্দিদের জন্য এ ধরনের উদ্যোগ তাদের প্রতি আমাদের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও দায়িত্ববোধকে প্রকাশ করে। এটি শুধু তাদের মনোবল বাড়ানোর জন্যই নয়, বরং সমাজে ইতিবাচক বার্তা প্রদান করে।

এ ছাড়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজগঞ্জ কারাগারের সার্বিক ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন ও খাদ্য সরবরাহ, স্বাস্থ্যসেবা এবং বন্দিদের বসবাসের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি জেল সুপারসহ অন্য কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, বন্দিদের পুনর্বাসন ও সুস্থ জীবনের জন্য উন্নত সেবা প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখা উচিত।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কারাগারের অন্য কর্মচারীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে আরও উন্নত সেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।

এদিকে তরমুজ বিতরণে বন্দিদের মধ্যে আনন্দের সঞ্চার হয়। গত ২৩ মার্চ কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আমি যতদিন কারাগারে বন্দি ছিলাম, ততদিন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হইনি। কারাগারে পরিবেশিত খাবার ভালো ছিল, বিশেষ করে রমজানে সেহরি ও ইফতার খুবই ভালো ছিল।

একই দিনে বন্দি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কারাগারের পরিবেশ অনুকূল ছিল। আমাদের পরিবারের কেউ যখন সাক্ষাৎ করতে আসত, তখন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো না। কারা কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এক্ষেত্রে খুবই সহায়ক ছিলেন।

এ ছাড়া কারাগারের এক বন্দি বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন নিয়মিত ইফতারি পাই, যা আমাদের শারীরিক প্রয়োজন মেটায়। তবে তরমুজের আয়োজন আমাদের মনে এক নতুন অনুভূতি সৃষ্টি করেছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার এএসএম কামরুল হুদা বলেন, ‘বন্দিদের পুনর্বাসন ও সুশৃঙ্খল জীবন নিশ্চিত করার জন্য আমরা সংকল্পবদ্ধ। কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক এবং রাজশাহী বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শকের সার্বিক দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

জেল সুপার বলেন, বন্দিদের সুষ্ঠু জীবনযাপন নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতে আরও নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। কারাগারের উন্নয়ন ও মানবিক উদ্যোগ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।