ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু

ছবি: সংগৃহীত

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে আজ শুক্রবার থেকে। আগামী ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসব।পূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। সারা দেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। ঢাক-ঢোল কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মণ্ডপ। রামকৃষ্ণ মিশনের পূজার নির্ঘণ্টে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে কল্পারম্ভ এবং বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে উৎসবের প্রথম দিন ষষ্ঠী পূজা সম্পন্ন হবে। সকাল থেকে চণ্ডিপাঠে মুখরিত থাকবে সব মণ্ডপ এলাকা।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন শনিবার মহাসপ্তমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে। মহাঅষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে এবং বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। সন্ধিপূজা শুরু হবে রাত ৮টা ৬ মিনিটে। সোমবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে শুরু হবে নবমী পূজা। পরদিন মঙ্গলবার দশমী পূজা শুরু সকাল ৬টা ৩০মিনিট। পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন হবে সকাল ৯টা ৪৯ মিনিটের মধ্যে। সন্ধ্যায় আরাত্রিকের পর প্রতিমা বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবের।

 

রাজধানীতে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতৃত্বে দশমীর দিন বিকালে পলাশীর মোড় থেকে প্রতি বছরের ন্যায় বিজয়া শোভাযাত্রা শ্রীশ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির হয়ে পলাশী বাজার, জগন্নাথ হল, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট, বঙ্গবাজার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ভবন, গোলাপ শাহ মাজার, গুলিস্তান মোড়, নবাবপুর রোড, রায় সাহেব বাজার, বাহাদুর শাহ পার্ক হয়ে বুড়িগঙ্গা নদীর ওয়াইজ ঘাটে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপের প্রতিমা নিরঞ্জনের মাধ্যমে শেষ হবে।

 

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দার জানিয়েছেন, এবার সারা দেশে ৩২ হাজার ৪শ ৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আর রাজধানী ঢাকাতে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হবে ২৪৬টি মণ্ডপে। গত বছর সারা দেশে ৩২ হাজার ১শ ৬৮টি মন্দিরে এবং রাজধানীতে ২৪১টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

 

দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ইতিমধ্যে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দফতর, ধর্ম মন্ত্রণালয়, মহানগর পুলিশ কমিশনার, নৌ পুলিশের সঙ্গে নেতাদের বৈঠক হয়েছে।

 

রাজধানীতে কেন্দ্রীয় পূজা উৎসব হিসেবে পরিচিত ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মণ্ডপে পূজার পাশাপাশি ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠান, বস্ত্র বিতরণ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা, স্বেচ্ছা রক্তদান ও বিজয়া শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়াও ঢাকায় রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ পূজামণ্ডপ, গুলশান বনানী সার্বজনীন পূজা পরিষদ মণ্ডপ রমনা কালীমন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রম, বরোদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান, সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতা, ভোলানাথ মন্দির আশ্রম, জগন্নাথ হল, ঋষিপাড়া গৌতম মন্দির, শাখারী বাজারের পানিটোলা মন্দিরসহ অন্যান্য মণ্ডপে দুর্গোৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

 

১৪ অক্টোবর পবিত্র মহালয়ার মাধ্যমে দেবীপক্ষের সূচনা হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজা একটি ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় আয়োজন হলেও ঐতিহ্যগতভাবেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এ অনুষ্ঠান এখন সার্বজনীনতা লাভ করেছে। শারদীয় দুর্গাপূজার শান্তি ও সম্প্রীতির বাণী এবং অসুর শক্তির বিরুদ্ধে সুরশক্তির বিজয়ের চেতনা বিশ্বজনীন। হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এই চেতনাকে ধারণ করেই বিকশিত হয়েছে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে শারদীয় দুর্গাপূজা জাতীয় জীবনে একটি ঐক্য ও সমন্বয়ের ধারা প্রতিষ্ঠার সূচনা করতে পেরেছে।

 

দুর্গোৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জেএল ভৌমিক ও সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দার এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ ও সাধারণ সম্পাদক রমেন মণ্ডল সনাতন সম্প্রদায়সহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিককে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু

আপলোড সময় : ০৯:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে আজ শুক্রবার থেকে। আগামী ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসব।পূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। সারা দেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। ঢাক-ঢোল কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মণ্ডপ। রামকৃষ্ণ মিশনের পূজার নির্ঘণ্টে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে কল্পারম্ভ এবং বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে উৎসবের প্রথম দিন ষষ্ঠী পূজা সম্পন্ন হবে। সকাল থেকে চণ্ডিপাঠে মুখরিত থাকবে সব মণ্ডপ এলাকা।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন শনিবার মহাসপ্তমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে। মহাঅষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে এবং বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। সন্ধিপূজা শুরু হবে রাত ৮টা ৬ মিনিটে। সোমবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে শুরু হবে নবমী পূজা। পরদিন মঙ্গলবার দশমী পূজা শুরু সকাল ৬টা ৩০মিনিট। পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন হবে সকাল ৯টা ৪৯ মিনিটের মধ্যে। সন্ধ্যায় আরাত্রিকের পর প্রতিমা বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবের।

 

রাজধানীতে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতৃত্বে দশমীর দিন বিকালে পলাশীর মোড় থেকে প্রতি বছরের ন্যায় বিজয়া শোভাযাত্রা শ্রীশ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির হয়ে পলাশী বাজার, জগন্নাথ হল, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট, বঙ্গবাজার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ভবন, গোলাপ শাহ মাজার, গুলিস্তান মোড়, নবাবপুর রোড, রায় সাহেব বাজার, বাহাদুর শাহ পার্ক হয়ে বুড়িগঙ্গা নদীর ওয়াইজ ঘাটে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপের প্রতিমা নিরঞ্জনের মাধ্যমে শেষ হবে।

 

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দার জানিয়েছেন, এবার সারা দেশে ৩২ হাজার ৪শ ৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আর রাজধানী ঢাকাতে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হবে ২৪৬টি মণ্ডপে। গত বছর সারা দেশে ৩২ হাজার ১শ ৬৮টি মন্দিরে এবং রাজধানীতে ২৪১টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

 

দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ইতিমধ্যে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দফতর, ধর্ম মন্ত্রণালয়, মহানগর পুলিশ কমিশনার, নৌ পুলিশের সঙ্গে নেতাদের বৈঠক হয়েছে।

 

রাজধানীতে কেন্দ্রীয় পূজা উৎসব হিসেবে পরিচিত ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মণ্ডপে পূজার পাশাপাশি ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠান, বস্ত্র বিতরণ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা, স্বেচ্ছা রক্তদান ও বিজয়া শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়াও ঢাকায় রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ পূজামণ্ডপ, গুলশান বনানী সার্বজনীন পূজা পরিষদ মণ্ডপ রমনা কালীমন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রম, বরোদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান, সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতা, ভোলানাথ মন্দির আশ্রম, জগন্নাথ হল, ঋষিপাড়া গৌতম মন্দির, শাখারী বাজারের পানিটোলা মন্দিরসহ অন্যান্য মণ্ডপে দুর্গোৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

 

১৪ অক্টোবর পবিত্র মহালয়ার মাধ্যমে দেবীপক্ষের সূচনা হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজা একটি ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় আয়োজন হলেও ঐতিহ্যগতভাবেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এ অনুষ্ঠান এখন সার্বজনীনতা লাভ করেছে। শারদীয় দুর্গাপূজার শান্তি ও সম্প্রীতির বাণী এবং অসুর শক্তির বিরুদ্ধে সুরশক্তির বিজয়ের চেতনা বিশ্বজনীন। হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এই চেতনাকে ধারণ করেই বিকশিত হয়েছে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে শারদীয় দুর্গাপূজা জাতীয় জীবনে একটি ঐক্য ও সমন্বয়ের ধারা প্রতিষ্ঠার সূচনা করতে পেরেছে।

 

দুর্গোৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জেএল ভৌমিক ও সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দার এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ ও সাধারণ সম্পাদক রমেন মণ্ডল সনাতন সম্প্রদায়সহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিককে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।