ঢাকা , শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

চাটমোহরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের ৬ সদস্য গ্রেফতার

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের ৬ জন আটক। ছবি : সংগৃহীত

পাবনার চাটমোহর রেলস্টেশনে অভিযান চালিয়ে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের ৬ জনকে আটক করেছে র‌্যাব। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাটমোহর রেলস্টেশন থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বেশকিছু টিকিট, মোবাইল ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের অমৃতকুন্ডা গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের তিন ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৮), জাহিদুল ইসলাম (৩৪) ও আরিফুল ইসলাম (৩২), একই গ্রামের মৃত কামাল উদ্দিনের ছেলে আব্দুল জলিল (৪৫), আনোয়ার হোসেনের ছেলে আনিসুর রহমান (২৮), পূর্বটিয়ারতলা গ্রামের আবুল কালাম শেখের ছেলে হাবিবুর রহমান (২২)।

সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১২, সিপিসি-২ পাবনার কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান এসব তথ্য জানান।

মেজর এহতেশামুল হক খান বলেন, ‘চাটমোহর রেলস্টেশনে দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল একটি চক্র। অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে টিকিট কালোবাজারি চক্রের মুলহোতা শরিফুল ইসলামসহ উল্লেখিত ৬ জনকে আটক করে র‌্যাব সদস্যরা। এ সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় বিভিন্ন ট্রেনের ৩৬টি আসনের টিকিট, ৭টি মোবাইল ফোন ও টিকিট বিক্রির নগদ ১৫ হাজার টাকা।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা র‌্যাবকে জানিয়েছে, চাটমোহর রেলস্টেশনে টিকিট কালোবাজারি সিন্ডিকেটের মূলহোতা শরিফুলের নেতৃত্বে এই চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন যাবত চাটমোহর স্টেশন থেকে রাজশাহী-ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, পদ্মা এক্সপ্রেস ও ধুমকেতু এক্সপ্রেস এবং খুলনা-ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস, দিনাজপুর-ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিলেন।

এ ঘটনায় মামলা দায়ের করে আটককৃতদের চাটমোহর থানায় সোপর্দ করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানায় র‌্যাব।

আটককৃতদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে র‌্যাব-১২ পাবনার কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান জানান, আটক শরিফুলের নেতৃত্বে তার সহযোগিরা প্রথমত ট্রেনের কাউন্টারে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ যাত্রী, রেলস্টেশনের কুলি, স্টেশনের আশেপাশের এলাকার টোকাই, রিক্সাওয়ালা ও দিনমজুরদেরকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে টিকিট সংগ্রহ করে থাকে। এইক্ষেত্রে তাদের প্রত্যেককে ৪টি করে টিকিট সংগ্রহ করার বিনিময়ে ১০০ টাকা করে দেয়া হতো।

এছাড়াও কাউন্টারে থাকা কিছু অসাধু টিকেট বুকিং কর্মচারীদের দিয়ে বিভিন্ন সাধারণ যাত্রীদের টিকিট কাটার সময় প্রদেয় এনআইডি সংগ্রহ করে রাখতো এবং পরবর্তীতে সেগুলো ব্যবহার করে সংরক্ষণকৃত প্রতিটি এনআইডি দ্বারা ৪টি করে ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করতো। এভাবে তারা প্রতিদিন প্রায় শতাধিক টিকিট সংগ্রহ করতো। সেই সাথে ঈদ, পুজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনকে উপলক্ষ করে আটককৃতরা তাদের কাছে সংরক্ষিত জনসাধারণের এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে, এমনকি সার্ভার ডাউন করে তারা অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতো। আর আটককৃত আরিফুল, আনিছুর, জলিল, জাহিদুল ও হাবিবদের প্রধান কাজ ছিলো অনলাইন টিকিট প্রত্যাশিদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে দর কষা-কষি করে অনলাইন টিকিটগুলো অতিরিক্ত মুল্যে বিক্রি করা।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

চাটমোহরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের ৬ সদস্য গ্রেফতার

আপলোড সময় : ০৯:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

পাবনার চাটমোহর রেলস্টেশনে অভিযান চালিয়ে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের ৬ জনকে আটক করেছে র‌্যাব। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাটমোহর রেলস্টেশন থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বেশকিছু টিকিট, মোবাইল ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের অমৃতকুন্ডা গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের তিন ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৮), জাহিদুল ইসলাম (৩৪) ও আরিফুল ইসলাম (৩২), একই গ্রামের মৃত কামাল উদ্দিনের ছেলে আব্দুল জলিল (৪৫), আনোয়ার হোসেনের ছেলে আনিসুর রহমান (২৮), পূর্বটিয়ারতলা গ্রামের আবুল কালাম শেখের ছেলে হাবিবুর রহমান (২২)।

সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১২, সিপিসি-২ পাবনার কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান এসব তথ্য জানান।

মেজর এহতেশামুল হক খান বলেন, ‘চাটমোহর রেলস্টেশনে দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল একটি চক্র। অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে টিকিট কালোবাজারি চক্রের মুলহোতা শরিফুল ইসলামসহ উল্লেখিত ৬ জনকে আটক করে র‌্যাব সদস্যরা। এ সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় বিভিন্ন ট্রেনের ৩৬টি আসনের টিকিট, ৭টি মোবাইল ফোন ও টিকিট বিক্রির নগদ ১৫ হাজার টাকা।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা র‌্যাবকে জানিয়েছে, চাটমোহর রেলস্টেশনে টিকিট কালোবাজারি সিন্ডিকেটের মূলহোতা শরিফুলের নেতৃত্বে এই চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন যাবত চাটমোহর স্টেশন থেকে রাজশাহী-ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, পদ্মা এক্সপ্রেস ও ধুমকেতু এক্সপ্রেস এবং খুলনা-ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস, দিনাজপুর-ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিলেন।

এ ঘটনায় মামলা দায়ের করে আটককৃতদের চাটমোহর থানায় সোপর্দ করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানায় র‌্যাব।

আটককৃতদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে র‌্যাব-১২ পাবনার কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান জানান, আটক শরিফুলের নেতৃত্বে তার সহযোগিরা প্রথমত ট্রেনের কাউন্টারে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ যাত্রী, রেলস্টেশনের কুলি, স্টেশনের আশেপাশের এলাকার টোকাই, রিক্সাওয়ালা ও দিনমজুরদেরকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে টিকিট সংগ্রহ করে থাকে। এইক্ষেত্রে তাদের প্রত্যেককে ৪টি করে টিকিট সংগ্রহ করার বিনিময়ে ১০০ টাকা করে দেয়া হতো।

এছাড়াও কাউন্টারে থাকা কিছু অসাধু টিকেট বুকিং কর্মচারীদের দিয়ে বিভিন্ন সাধারণ যাত্রীদের টিকিট কাটার সময় প্রদেয় এনআইডি সংগ্রহ করে রাখতো এবং পরবর্তীতে সেগুলো ব্যবহার করে সংরক্ষণকৃত প্রতিটি এনআইডি দ্বারা ৪টি করে ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করতো। এভাবে তারা প্রতিদিন প্রায় শতাধিক টিকিট সংগ্রহ করতো। সেই সাথে ঈদ, পুজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনকে উপলক্ষ করে আটককৃতরা তাদের কাছে সংরক্ষিত জনসাধারণের এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে, এমনকি সার্ভার ডাউন করে তারা অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতো। আর আটককৃত আরিফুল, আনিছুর, জলিল, জাহিদুল ও হাবিবদের প্রধান কাজ ছিলো অনলাইন টিকিট প্রত্যাশিদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে দর কষা-কষি করে অনলাইন টিকিটগুলো অতিরিক্ত মুল্যে বিক্রি করা।