ঢাকা , শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
হান্ডিয়াল নিউজ২৪ ডটকম এ জরুরি  সংবাদকর্মী আবশ্যক। আবেদন করুন- ই-মেইলে onlynews.calo@gmail.com

চলনবিল অঞ্চলে রসুন উৎপাদনে রেকর্ড

  • হান্ডিয়াল নিউজ
  • আপলোড সময় : ০৯:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪
  • ১২৭ বার দেখা হয়েছে।

রসুন আবাদে পাবনা ও নাটোর জেলার চাষিরা দেশে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। এ বছর দেশের মোট উৎপাদনকৃত রসুনের ৬৬ শতাংশই উৎপাদিত হয়েছে চলনবিল অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে। মৌসুমের শুরুতেই রসুনের ভালো দাম পেয়ে খুশি এ অঞ্চলের চাষিরা।

রসুনের আশাতীত দাম ও বাম্পার ফলনে ফুরফুরে মেজাজে আছেন চলনবিল অঞ্চলের রসুন চাষিরা। উৎপাদনকারী চাষিরা যে দামে বিক্রি করছেন খুচরা বাজারে অনেক চড়া দামেই রসুন কিনছে সাধারণ ক্রেতারা। পাইকারি বাজার ও খুচরা বাজারে দামের রাত-দিন পার্থক্যের জন্য কৃষকরা অবশ্য অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থাপনাকেই দোষারোপ করেছেন।

 

বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (খামারবাড়ি) উপপরিচালক মো: জামাল উদ্দিন নয়া দিগন্তকে বলেন, এ বছর দেশে ৮৬ হাজার ৪৯৯ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। আবাদকৃত জমি থেকে উৎপাদিত হয়েছে প্রায় সাত দশমিক ২৪ লাখ টন রসুন।
গত বছরের তুলনায় এ বছর রসুন আবাদের জমি কিছুটা কমলেও আবহাওয়া ভালো থাকায় এ বছর রসুনের বা¤পার ফলন হয়েছে বলে জানান তিনি। দেশের উৎপাদিত মোট রসুনের প্রায় অর্ধেকই উৎপাদিত হয়েছে নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলায় বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।

সিরাজগঞ্জ, নাটোর ও পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নাটোর জেলায় এ বছর ২৫ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে রসুন আবাদ করে উৎপাদন হয়েছে প্রায় দুই দশমিক ৩৮ লাখ টন রসুন। আর পাবনা জেলায় ১৩ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে রসুন আবাদ করে উৎপাদন হয়েছে প্রায় এক দশমিক ২৭ লাখ টন। এ অঞ্চলে মোট রসুন উৎপাদন হয়েছে তিন দশমিক ৬৫ লাখ টন।
দেশের মোট উৎপাদিত সাত দশমিক ২৪ লাখ টন রসুনের প্রায় তিন দশমিক ৬৫ লাখ টন রসুন উৎপাদন হয়েছে নাটোর ও পাবনা জেলার চলনবিল অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে।

সরেজমিন চলনবিল অঞ্চলের রসুন আবাদের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চলনবিলের পাইকারি বাজারে ভালো মানের এক মন রসুন বিক্রি হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকায়। অপেক্ষাকৃত কম মানসম্মত রসুন বিক্রি হচ্ছে আড়াই হাজার থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকা মন দরে যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন।

কামাল শেখ বলেন, এক বিঘা জমিতে রসুন আবাদ করতে এ বছর খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। উৎপাদিত রসুন বাজারে বিক্রি করে এক লাখ থেকে এক লাখ ১২ হাজার টাকার বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ তুলে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। এক বিঘা জমি থেকে ২৫ থেকে ২৮ মণ রসুন পাওয়া যায় যার ৭৫ শতাংশ ভালো মানের রসুন।

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. মো: জামিল জানান, বেলে দোঁ-আশ মাটি রসুন চাষের জন্য বেশি উপযোগী। জমিতে টিএসপি, পটাশ ও জিপসাম ছিটানোর দু-একদিনের মধ্যে নরম জমিতে সারিবদ্ধভাবে রসুন বীজ রোপণ করতে হয়। রোপণের জন্য প্রতি বিঘা জমিতে দুই মণ রসুনের প্রয়োজন হয়। জমিতে রসুন রোপণের দিনই খড় বা বিচালী দিয়ে জমি ঢেকে দিতে হয়। বীজ রোপণের একমাস পরে পানি সেচ দিয়ে জমিতে ইউরিয়া ও এমওপি সার ছিটিয়ে দিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। গত কয়েক বছর ধরে রসুন চাষ লাভজনক হওয়ায় চলনবিল অঞ্চলের কৃষকরা রসুনের আবাদের দিকে ঝুঁকছে। এর ফলে দেশের বেশির ভাগ রসুন এ অঞ্চলেই উৎপাদিত হয়।

কৃষকদের স্বার্থে চলনবিল অঞ্চলে সরকারিভাবে কৃষিপণ্যের সংরক্ষণাগার গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে কৃষকরা রসুন সংরক্ষণ করে কাঙ্খিত দাম পেলে বিক্রি করার সুযোগ পাবে।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

চলনবিল অঞ্চলে রসুন উৎপাদনে রেকর্ড

আপলোড সময় : ০৯:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

রসুন আবাদে পাবনা ও নাটোর জেলার চাষিরা দেশে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। এ বছর দেশের মোট উৎপাদনকৃত রসুনের ৬৬ শতাংশই উৎপাদিত হয়েছে চলনবিল অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে। মৌসুমের শুরুতেই রসুনের ভালো দাম পেয়ে খুশি এ অঞ্চলের চাষিরা।

রসুনের আশাতীত দাম ও বাম্পার ফলনে ফুরফুরে মেজাজে আছেন চলনবিল অঞ্চলের রসুন চাষিরা। উৎপাদনকারী চাষিরা যে দামে বিক্রি করছেন খুচরা বাজারে অনেক চড়া দামেই রসুন কিনছে সাধারণ ক্রেতারা। পাইকারি বাজার ও খুচরা বাজারে দামের রাত-দিন পার্থক্যের জন্য কৃষকরা অবশ্য অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থাপনাকেই দোষারোপ করেছেন।

 

বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (খামারবাড়ি) উপপরিচালক মো: জামাল উদ্দিন নয়া দিগন্তকে বলেন, এ বছর দেশে ৮৬ হাজার ৪৯৯ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। আবাদকৃত জমি থেকে উৎপাদিত হয়েছে প্রায় সাত দশমিক ২৪ লাখ টন রসুন।
গত বছরের তুলনায় এ বছর রসুন আবাদের জমি কিছুটা কমলেও আবহাওয়া ভালো থাকায় এ বছর রসুনের বা¤পার ফলন হয়েছে বলে জানান তিনি। দেশের উৎপাদিত মোট রসুনের প্রায় অর্ধেকই উৎপাদিত হয়েছে নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলায় বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।

সিরাজগঞ্জ, নাটোর ও পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নাটোর জেলায় এ বছর ২৫ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে রসুন আবাদ করে উৎপাদন হয়েছে প্রায় দুই দশমিক ৩৮ লাখ টন রসুন। আর পাবনা জেলায় ১৩ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে রসুন আবাদ করে উৎপাদন হয়েছে প্রায় এক দশমিক ২৭ লাখ টন। এ অঞ্চলে মোট রসুন উৎপাদন হয়েছে তিন দশমিক ৬৫ লাখ টন।
দেশের মোট উৎপাদিত সাত দশমিক ২৪ লাখ টন রসুনের প্রায় তিন দশমিক ৬৫ লাখ টন রসুন উৎপাদন হয়েছে নাটোর ও পাবনা জেলার চলনবিল অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে।

সরেজমিন চলনবিল অঞ্চলের রসুন আবাদের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চলনবিলের পাইকারি বাজারে ভালো মানের এক মন রসুন বিক্রি হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকায়। অপেক্ষাকৃত কম মানসম্মত রসুন বিক্রি হচ্ছে আড়াই হাজার থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকা মন দরে যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন।

কামাল শেখ বলেন, এক বিঘা জমিতে রসুন আবাদ করতে এ বছর খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। উৎপাদিত রসুন বাজারে বিক্রি করে এক লাখ থেকে এক লাখ ১২ হাজার টাকার বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ তুলে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। এক বিঘা জমি থেকে ২৫ থেকে ২৮ মণ রসুন পাওয়া যায় যার ৭৫ শতাংশ ভালো মানের রসুন।

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. মো: জামিল জানান, বেলে দোঁ-আশ মাটি রসুন চাষের জন্য বেশি উপযোগী। জমিতে টিএসপি, পটাশ ও জিপসাম ছিটানোর দু-একদিনের মধ্যে নরম জমিতে সারিবদ্ধভাবে রসুন বীজ রোপণ করতে হয়। রোপণের জন্য প্রতি বিঘা জমিতে দুই মণ রসুনের প্রয়োজন হয়। জমিতে রসুন রোপণের দিনই খড় বা বিচালী দিয়ে জমি ঢেকে দিতে হয়। বীজ রোপণের একমাস পরে পানি সেচ দিয়ে জমিতে ইউরিয়া ও এমওপি সার ছিটিয়ে দিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। গত কয়েক বছর ধরে রসুন চাষ লাভজনক হওয়ায় চলনবিল অঞ্চলের কৃষকরা রসুনের আবাদের দিকে ঝুঁকছে। এর ফলে দেশের বেশির ভাগ রসুন এ অঞ্চলেই উৎপাদিত হয়।

কৃষকদের স্বার্থে চলনবিল অঞ্চলে সরকারিভাবে কৃষিপণ্যের সংরক্ষণাগার গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে কৃষকরা রসুন সংরক্ষণ করে কাঙ্খিত দাম পেলে বিক্রি করার সুযোগ পাবে।