ঢাকা , শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। সবাইকে হান্ডিয়াল নিউজ২৪ পরিবারের পক্ষ থেকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা।

চলনবিলের মাঠে হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ

চলনবিলের দিগন্তজুড়ে এখন হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ। শস্য ভান্ডার খ্যাত দেশের সর্ববৃহৎ বিল চলনবিল। পাবনার চাটমোহরের বিলজুড়ে ও চলনবিলের মাঠে মাঠে সবুজ আর হলুদ রঙের ফুলে ছেয়ে গেছে।
সরজমিনে দেখা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল, নিমাইচড়া, ছাইকোলা, বিলচলন, হরিপুরসহ উপজেলার মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। দু’চোখ যেদিকে যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। চাটমোহরের মাঠে প্রকৃতি যেন সেজেছে আপন মহিমায়। এমন নয়নাভিরাম সরিষা ফুলের দৃশ্য, ফুলের গন্ধ, পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর মৌমাছির গুঞ্জন মনকে বিমোহিত করে। দিগন্তজুড়ে হলুদ সরিষা ফুলে কৃষক স্বপ্ন বুনছে।

এখন সরিষা গাছে ফুল ধরেছে, আর কিছুদিন পরেই আসবে ফল। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ও পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেলে কৃষক সরিয়ায় ভাল ফলনের আশা করছেন। বিগত বছরের তুলনামূলক এ বছর সরিষার আবাদ অনেক ভাল হয়েছে। তাছাড়া সময়মতো সার-কীটনাশক ব্যবহারের কারণে সরিষার আবাদ করতে কৃষকের কোন প্রকার বেগ পেতে হয়নি।

চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল পাকপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বিল থেকে দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় ও আবহাওয়া ভালো থাকায় আমি ৫ বিঘা সরিষার আবাদ করেছি। অনেক সুন্দর আবাদ হয়েছে, ভালো ফলন হবে আশা করছি। নিমাইচড়ার সমাজ গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমান এ বছর সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। উপজেলার দরাপপুর গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম সেও ৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন, তারা বলেন সরিষা চাষ এখন লাভজনক হওয়ায় এলাকায় দিন দিন চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষকেরা বলেন, আবহাওয়া ভাল থাকলে এবার প্রতি বিঘা জমিতে ৬-৭ মণ হারে সরিষা ঘরে তুলতে পারবে। এ বছরের মতো আগামীতে ভালো দাম পাবেন বলে তাদের আশা।

এ অঞ্চলে উন্নত ফলনশীল জাতের বারী-৯,১১,১৪,১৫,১৭,১৮, বিনা- ৪, টরি-৭ জাতের সরিষার চাষ সহ স্থানীয় জাতের সরিষার চাষ হয়েছে।

 

 

চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুম বিল্লাহ জানান, উপজেলায় কয়েক দফা বন্যার পানি এলেও দ্রুত মাঠ থেকে পানি নেমে যায়। এ জন্য মাঠের মধ্যে জলাবদ্ধতা না থাকার কারনে অনেকেই সরিষা বীজ ফেলেছে সুবিধাজনকভাবে। তাই, এ বছর সরিষা আবাদ গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে।
উপজেলায় এ বছর ৮ হাজার ১শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে।

গত মৌসুমে চাষ হয়েছিল ৬ হাজার ৭শ’ ৫০ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে এ বছর ১ হাজার ৪শ’ হেক্টর সরিষা চাষ বেশি হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে উপজেলার ৪ হাজার ৫শ’ কৃষককে সরিষা বীজ ও সার বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। সরিষা চাষের পদ্ধতি ও পোকার আক্রমণ হলে কি করণীয় সে বিষয়ে কৃষককে সচেতন করেছেন।

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

চলনবিলের মাঠে হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ

আপলোড সময় : ১০:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৪

চলনবিলের দিগন্তজুড়ে এখন হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ। শস্য ভান্ডার খ্যাত দেশের সর্ববৃহৎ বিল চলনবিল। পাবনার চাটমোহরের বিলজুড়ে ও চলনবিলের মাঠে মাঠে সবুজ আর হলুদ রঙের ফুলে ছেয়ে গেছে।
সরজমিনে দেখা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল, নিমাইচড়া, ছাইকোলা, বিলচলন, হরিপুরসহ উপজেলার মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। দু’চোখ যেদিকে যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। চাটমোহরের মাঠে প্রকৃতি যেন সেজেছে আপন মহিমায়। এমন নয়নাভিরাম সরিষা ফুলের দৃশ্য, ফুলের গন্ধ, পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর মৌমাছির গুঞ্জন মনকে বিমোহিত করে। দিগন্তজুড়ে হলুদ সরিষা ফুলে কৃষক স্বপ্ন বুনছে।

এখন সরিষা গাছে ফুল ধরেছে, আর কিছুদিন পরেই আসবে ফল। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ও পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেলে কৃষক সরিয়ায় ভাল ফলনের আশা করছেন। বিগত বছরের তুলনামূলক এ বছর সরিষার আবাদ অনেক ভাল হয়েছে। তাছাড়া সময়মতো সার-কীটনাশক ব্যবহারের কারণে সরিষার আবাদ করতে কৃষকের কোন প্রকার বেগ পেতে হয়নি।

চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল পাকপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বিল থেকে দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় ও আবহাওয়া ভালো থাকায় আমি ৫ বিঘা সরিষার আবাদ করেছি। অনেক সুন্দর আবাদ হয়েছে, ভালো ফলন হবে আশা করছি। নিমাইচড়ার সমাজ গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমান এ বছর সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। উপজেলার দরাপপুর গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম সেও ৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন, তারা বলেন সরিষা চাষ এখন লাভজনক হওয়ায় এলাকায় দিন দিন চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষকেরা বলেন, আবহাওয়া ভাল থাকলে এবার প্রতি বিঘা জমিতে ৬-৭ মণ হারে সরিষা ঘরে তুলতে পারবে। এ বছরের মতো আগামীতে ভালো দাম পাবেন বলে তাদের আশা।

এ অঞ্চলে উন্নত ফলনশীল জাতের বারী-৯,১১,১৪,১৫,১৭,১৮, বিনা- ৪, টরি-৭ জাতের সরিষার চাষ সহ স্থানীয় জাতের সরিষার চাষ হয়েছে।

 

 

চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুম বিল্লাহ জানান, উপজেলায় কয়েক দফা বন্যার পানি এলেও দ্রুত মাঠ থেকে পানি নেমে যায়। এ জন্য মাঠের মধ্যে জলাবদ্ধতা না থাকার কারনে অনেকেই সরিষা বীজ ফেলেছে সুবিধাজনকভাবে। তাই, এ বছর সরিষা আবাদ গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে।
উপজেলায় এ বছর ৮ হাজার ১শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে।

গত মৌসুমে চাষ হয়েছিল ৬ হাজার ৭শ’ ৫০ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে এ বছর ১ হাজার ৪শ’ হেক্টর সরিষা চাষ বেশি হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে উপজেলার ৪ হাজার ৫শ’ কৃষককে সরিষা বীজ ও সার বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। সরিষা চাষের পদ্ধতি ও পোকার আক্রমণ হলে কি করণীয় সে বিষয়ে কৃষককে সচেতন করেছেন।