ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। সবাইকে হান্ডিয়াল নিউজ২৪ পরিবারের পক্ষ থেকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা।

এত বড় অন্যায়-অবিচার হতে পারে না, শিশু ধর্ষণ প্রসঙ্গে হাইকোর্ট

মাগুরায় ৮ বছরে শিশু ধর্ষণের প্রসঙ্গে হাইকোর্ট বলেছেন, এত বড় অন্যায়-অবিচার আর হতে পারে না।  আমরা ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।  এগুলো দমাতে হবে।

 

রোববার (৯ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালত বলেন, ধর্ষণের মতো পাশবিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে এ বিষয়ে আমাদের সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।

 

পরে আদালত মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির ছবি, ভিডিও যেসব গণমাধ্যম ও ব্যক্তি প্রকাশ-প্রচার করেছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আইজিপিসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে শিশুটির সব ছবি, ভিডিও  গণমাধ্যম, অনলাইন পোর্টাল, সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিটিআরসি কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

পাশাপাশি ধর্ষণের শিকার শিশু ও তার ১৪ বছরের বোনকে দেখভালের জন্য সমাজ সেবা অফিসার নিয়োগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার বিরতি ছাড়া ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নারী শিশু নির্যাতন ও দমন ট্রাইব্যুনালকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ, ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।

 

এর আগে, আদালতে মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার মাহসিব হোসাইন।  পরে আদালতে নির্দেশে ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ, ব্যারিস্টার মাহসিব হোসাইন এ বিষয়ে রিট দায়ের করেন।

এদিকে এ ঘটনায় মামলা করেছেন শিশুটির মা। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা (শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করে।  বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাসুর জানতো।  পরে ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়।

শনিবার (৮ মার্চ) সকালে বড় বোন ও বাবাকে দিয়ে মাগুরা সদর থানায় এজাহার পাঠান শিশুটির মা।  সেই অনুযায়ী বেলা ৩টার দিকে মামলা রেকর্ড হয়।  মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৪) এর ক/৩০ ধারায় ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগ করা হয়। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরকে আসামি করা হয়েছে।  তারা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন।  পরে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আট বছরের এই শিশুটি বুধবার (৫ মার্চ) বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয়।  শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেও তার অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। ৬ মার্চ রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার (৭ মার্চ) রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।  শনিবার (৮ মার্চ) বিকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে রজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়েছে।

 

নিউজ ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

এত বড় অন্যায়-অবিচার হতে পারে না, শিশু ধর্ষণ প্রসঙ্গে হাইকোর্ট

আপলোড সময় : ১১:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

মাগুরায় ৮ বছরে শিশু ধর্ষণের প্রসঙ্গে হাইকোর্ট বলেছেন, এত বড় অন্যায়-অবিচার আর হতে পারে না।  আমরা ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।  এগুলো দমাতে হবে।

 

রোববার (৯ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালত বলেন, ধর্ষণের মতো পাশবিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে এ বিষয়ে আমাদের সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।

 

পরে আদালত মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির ছবি, ভিডিও যেসব গণমাধ্যম ও ব্যক্তি প্রকাশ-প্রচার করেছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আইজিপিসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে শিশুটির সব ছবি, ভিডিও  গণমাধ্যম, অনলাইন পোর্টাল, সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিটিআরসি কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

পাশাপাশি ধর্ষণের শিকার শিশু ও তার ১৪ বছরের বোনকে দেখভালের জন্য সমাজ সেবা অফিসার নিয়োগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার বিরতি ছাড়া ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নারী শিশু নির্যাতন ও দমন ট্রাইব্যুনালকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ, ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।

 

এর আগে, আদালতে মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার মাহসিব হোসাইন।  পরে আদালতে নির্দেশে ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ, ব্যারিস্টার মাহসিব হোসাইন এ বিষয়ে রিট দায়ের করেন।

এদিকে এ ঘটনায় মামলা করেছেন শিশুটির মা। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা (শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করে।  বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাসুর জানতো।  পরে ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়।

শনিবার (৮ মার্চ) সকালে বড় বোন ও বাবাকে দিয়ে মাগুরা সদর থানায় এজাহার পাঠান শিশুটির মা।  সেই অনুযায়ী বেলা ৩টার দিকে মামলা রেকর্ড হয়।  মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৪) এর ক/৩০ ধারায় ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগ করা হয়। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরকে আসামি করা হয়েছে।  তারা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন।  পরে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আট বছরের এই শিশুটি বুধবার (৫ মার্চ) বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয়।  শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেও তার অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। ৬ মার্চ রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার (৭ মার্চ) রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।  শনিবার (৮ মার্চ) বিকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে রজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়েছে।